বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

কালীগঞ্জে কাঠের সেতুটি ঝুঁকি নিয়ে পারাপার 

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

কালীগঞ্জে কাঠের সেতুটি ঝুঁকি নিয়ে পারাপার 

হাজার হাজার মানুষের পারাপারের একমাত্র অবলম্বন কাঠের সেতুটি পুরোটা জুড়েই কাঠ উঠে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। কাঠের এই সেতুটি দীর্ঘদিন জোড়াতালি নিয়ে সংস্কার করে থাকে কর্তৃপক্ষ ফলে চলাচলের একমাত্র ভরসা। 

বর্তমানে সেতুটি এমন অবস্থায় পতিত হয়েছে যে সেতুতে ব্যবহূত কাঠ পচন ধরে উঠে যাচ্ছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রয়োজনে নতুন করে ভালো কাঠ ব্যবহার করে সেতুটি চলাচলের উপযুক্ত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

কালীগঞ্জ শহরের হাজার হাজার জনসাধারণ প্রতিদিন দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে দিন রাত ২৪ ঘণ্টা এই কাঠের সেতু দিয়ে চলাচল করছে জীবনের ঝুকি নিয়ে। এই সেতুর ওপর দিয়ে বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল অবাধে চলাচল করে থাকে। কালীগঞ্জ শহরটি খুবই ব্যস্ততম শহর যে কারণে সেতুর উপরটিতে চলাচল একটু বেশি। 

সেতুটির বেহাল দশার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান থাকলেও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতুটি ব্যবহারকারী সাধারণ জনগণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমনটা ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে। মাঝে মধ্যে অনেকে নদীর নিচেয় পড়ে যাচ্ছে। 

এই কাঠের সেতু দিয়ে প্রতিদিন সরকারি নলডাঙ্গা ভুষন পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোবারব আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সলিসুননেছা বালিকা বিদ্যালয়, ফয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আবুবক্কর মকছেদ আলী মহিলা আলীম মাদ্রাসা, শহীদ নুর আলী ডিগ্রি কলেজ, গোহাটা নুরআনী মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে ও তাদের পথ চলার একমাত্র ভরসা। এ ছাড়া রয়েছে কালীগঞ্জ শহরের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও কাচাবাজার। 

আবার কালীগঞ্জ সরকারি হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে যাওয়ার প্রধান চলাচলের একমাত্র ভরসা। কালীগঞ্জ শহরের চিত্রা নদীর উপর নবনির্মিত ব্রিজের কাজ চলমান থাকায় শহরের জনতা মোড় থেকে একটি বাইপাস কাঠের রাস্তা, কাঠের সেতু হয়ে অপর প্রান্তে হাসপাতাল সড়কে গিয়ে মিশেছে। 

ব্রিজটি নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চিত্রা নদীর উপর অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে ছোট একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র ভরসা কাঠের সেতু। দুই প্রান্তে রয়েছে চিত্রা নদীর ভাঙনের খানা গর্ত ও অসমতল হওয়ায় চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনগণের। প্রায় ১৭ মাস অতিবাহিত হলেও ব্রিজের বাইপাস সড়ক ও সেতুজনিত জনদুর্ভোগ কমেনি একটুও। 

সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিয়ম মোতাবেক ১৬ মাসের মধ্যে ব্রিজের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে কাজ শেষ করতে পারেনি। বর্তমানে কাঠের সেতুটির অন্তত ২০টি স্থানে সম্পূর্ণ কাঠ উঠে ভেঙে গেছে। অনেক জায়গায় আবার ভাঙা স্থানে লাগানো বড় বড় লোহার তারকাটা আলগা অবস্থায় উঠে রয়েছে। 

এমনটি অবস্থার মধ্য দিয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সেতু ও সড়কটি ব্যবহার করছেন জীবনের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। চিত্রা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটির কাজ ২০২২ সালের জুলাই মাসে শুরু হলেও এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি, কাজটি কবে নাগাদ শেষ হবে তাও তারা বলতে পারছে না। 

যে কারণে এলাকার সচেতন মানুষ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়সারা কাঠের সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে, বিকল্প পথ দিয়ে চলাচল করতে গেছে অন্ত ২ কিলোমিটার পথ ঘুরে যতে ও আসতে হবে।

কালীগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র দিয়ে যাওয়া চিত্রা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঢাকার কনসিক অ্যান্ড বিল্ড লিমিটেডের সাইট পরিচালক আরিফ হোসেন জানান, নির্মাণকাজ ৯০ শতাংশের বেশি কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে জনসাধারণের চলাচলের পথসুগম করব।

কালীগঞ্জ পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ বলেন, ভেঙে যাওয়া কাঠের সেতুটি দ্রুত সংস্কারের জন্য আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছি। আশা করি তারা সেতুটি চলাচল করণে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিবেন। 

টিএইচ